সংবাদ সম্মেলন “ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সঃ বিশেষ বিশেষ বিষয়ে শিক্ষা-প্রশিক্ষণে অবদান”

ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স
(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত প্রতিষ্ঠান)

সংবাদ সম্মেলনঃ ১০ ডিসেম্বর ২০১৮
“ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সঃ বিশেষ বিশেষ বিষয়ে শিক্ষা-প্রশিক্ষণে অবদান”

ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স (ডিএসসিই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র অঙ্গীভূত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ডিগ্রী প্রোগ্রাম পড়ানো হয়। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সব ডিগ্রি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেয়া হয়। ‘লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স এন্ড পলিটিকাল সাইন্স’ কিংবা ‘দিল্লী স্কুল অব ইকোনমিক্স’-এর আদলে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। ২০১১ সাল থেকে অর্থনীতিতে একটি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ব-প্রথম ‘পরিবেশ অর্থনীতি’তে নিয়মিত স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রোগ্রাম চালু করা হয়। ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ-এর সার্বিক নেতৃত্বে এবং একটি সুদক্ষ পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি রাজধানীর ইস্কাটন-এ বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ভবনে অত্যন্ত নিরিবিলি পরিবেশে এর কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

অর্থনীতি বিষয়ে তিনটি বিশেষায়িত স্নাতকোত্তর ডিগ্রী, যথাক্রমে পরিবেশ অর্থনীতি (Environmental Economics), উন্নয়ন অর্থনীতি (Development Economics) এবং উদ্যোক্তা অর্থনীতি (Entrepreneurship Economics) এ্ই প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া হয়। এছাড়া, এখানে দু’টি বিশেষায়িত স্নাতক প্রোগ্রাম: পরিবেশ ও প্রাকৃতিকসম্পদ অর্থনীতি (Environmental & Resource Economics) এবং উন্নয়ন অর্থনীতি (Development Economics) বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি উদ্যোক্তা অর্থনীতি (Entrepreneurship Economics) বিষয়ে স্নাতকসহ আরো বেশ কিছু বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম ক্রমান্বয়ে চালু করবে। গবেষণা-ধর্মী ডিগ্রী (যেমন এমফিল/পিএইচডি) প্রোগ্রাম আগামীতে শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া দু’টো পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম রয়েছে: Post Graduate Diploma in Enterprise Development I Post Graduate Diploma in Economics.

ইতোমধ্যে পূর্বাচলে সরকারের কাছ থেকে ৯ বিঘা জমি পাওয়া গিয়েছে। যথাসময়ে সেখানে ক্যাম্পাস স্থানান্তর করা হবে।
বাংলাদেশ বিশ্ব-অর্থনীতিতে একটি উদীয়মান শক্তি। আজ বিশ্ব-দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সময় আসছে আমাদের। একদিকে যেমন আমাদের সামনে রয়েছে অপার সম্ভাবনা, তেমনি আছে নানা-ধরণের বাঁধা-বিপত্তি। বিশ্ব-অর্থনীতির এই সময়ে একটি সুদক্ষ জনবল জাতির জন্য খুলে দিতে পারে অপার সম্ভাবনার সেই দুয়ার যা বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে কাঙ্খিত আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন-লক্ষ্যের দিকে। সেই লক্ষ্য আর মানবকল্যাণের আদর্শকে সামনে রেখে ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স উল্লিখিত বিষয়সমূহে দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে দেশ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রেবিশ্ব-বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স উচ্চ-শিক্ষার গুণগতমান বজায় রাখা এবং সময়োপযোগী শিক্ষার স্বার্থে সুদক্ষ শিক্ষক-মন্ডলী, আধুনিক শ্রেণীকক্ষ, অত্যাধুনিক পাঠাগার, গবেষণা-ধর্মী শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সেই লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি ভর্তি-পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করে খুবই স্বল্প-সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করে থাকে। ড. কাজী খলীকুজজমান আহমদ-এর নেতৃত্বে এবং শিক্ষকদের নিরলস প্রচেষ্টা আর শিক্ষা-উপযোগী পরিবেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ৭/৮ বছরের মধ্যে দেশের অর্থনীতি শিক্ষায়, বিশেষ করে কয়েকটি বিশেষায়িত ক্ষেত্রে, একটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। আজ দেশের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স-এর গ্রাজুয়েটরা সুনাম আর দক্ষতা নিয়ে কর্মরত আছেন। বিগত কয়েক বছরে আমেরিকা, কানাডা, জার্মানী, ফিনল্যা-, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বেশকিছু স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স-এর গ্র্যাজুয়েটরা পিএইচডি এবং অন্যান্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে পূর্ণ স্কলারশিপসহ পড়াশুনার সুযোগ পাচ্ছে, যা খুবই উৎসাহব্যাঞ্জক। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের গবেষণার ফলাফল বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য গবেষণা পত্রিকায় (research journal) প্রকাশ করে থাকে। এছাড়া একটি ত্রৈমাসিক Newsletter প্রকাশিত হচ্ছে। শিগগিরি Economic Incubator প্রতিষ্ঠা করা হবে।

ইতোমধ্যে বিশ^ভারতীর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক চলমান আছে। একযুগে সেমিনার সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। এবং স্বল্প সময় ভিত্তিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বিনিময় চলছে। থাইল্যান্ডে নারিসুয়ান বিশ^বিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক শীঘ্রই স্বাক্ষরিত হওয়ার পথে।
ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স উল্লিখিত তিনটি বিষয়ে দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে দেশ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিশ্ব-বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর আশা রাখে।

বাংলাদেশ বর্তমানে দ্রুত আর্থ-সামাজিকভাবে এগিয়ে চলেছে। সততা, দেশপ্রেম, দক্ষতা, সময়োপযোগী প্রচেষ্টা আর মহান মুক্তি-যুদ্ধের আদর্শে উদ্ভাসিত ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স বিশ্বাস করে যে, এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, ত্বরান্বিত হবে। আজকের যুব সমাজের হাত ধরেই বাংলাদেশ বিশ^ দরবারে ধারাবাহিকভাবে আরো অনেক উচ্চতায় প্রতিষ্ঠা লাভ করবে, সৃষ্টি করবে গৌরবের ইতিহাস। ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স সেই লক্ষ্য অর্জনে অবদান রাখার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন জায়গায় Field Trip এর মাধ্যমে সরেজমিনে জ্ঞান লাভ করছে। উদ্যোক্তা অর্থনীতির আওতায় বিশেষ Case Competition অনুষ্ঠিত হয়।

বর্তমানে পরিবেশ ও সম্পদ অর্থনীতি (Environmental & Resource Economics) ও উন্নয়ন অর্থনীতি (Development Economics) -তে স্নাতক প্রথমবর্ষে (২০১৮-১৯) শিক্ষা বর্ষে ভর্তি চলছে। চলতি বছর পিকেএস এফ-এর সহযোগীতায় সাম্য ভিত্তিক প্রবৃদ্ধির উপর দু’টি বই প্রকাশিত হয়।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ
সভাপতি, গভর্ণিং কাউন্সিল
ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স

About the author